বসন্তের নতুন পত্র
আব্দুল্লাহ যুবায়ের
আমি কথা বলি কম, আর এই না বলা কথাগুলোই
আপন মনে লিখি আমি, কখনো গদ্যে কখনো পদ্যে
বন্ধুরা বলে: কিহে কবি নিরব কেন? বসন্ত যে এসেছে ধড়ায়
এমন সোনার দিনগুলো কি হবে না বন্দী হাতরে কড়াই
আমি বলি: ফাগুণ আনে তোদের মনে কৃষ্ণচূড়ার বাহার
আমি দেখি লাখো পেট নেইতো কোন আহার।
আমার অর্থে অনর্থ করিস, রেকোড গড়ার বাহানায়
সেই রেকোর্ড কি শুনিস কভু আমি কাঁদি মোহোনায়।
কইতেতো চাই কত কিছু, কথা আসে কথার পিছু
নাড়ীর কথা কইতে নাড়ি, কইতে গেলেই আসিস তোরা তেড়ে।
বন্ধুরা বলে: অমন কথা কওয়া বাপু তবে দিসনা কেনো ছেড়ে?
কবি তুই কবি কথা রসের ভান্ডার খুলে, দুখের কথা রাখবি, উচু শিকেয় তুলে।
আমি বলি: আমার সোনার দেশটারে যে পুড়িয়ে করিস ছারখাড়
দেখেছির কি কখনো সেই আগুনে করে শত মানুষ হাহাকার
চালাস গুলি, ভাঙিস ঘর, করিস যা আসে তোদের মনে করতে
আমরা কি আছি তবে কেবল তোদের হাতে মরতে?
সেই কথাটা বলতে কি তোরা দিবি নাকো আমায়?
শাক দিয়ে আর কত দিন মাছ রাখবি চেপে ধামায়?
হাজার বছরের জাতীয়তা আমার আজন্ম অহংকার
তোদের বাণীর বুলেট দিয়ে করতে চাস তা চূড়মার।
ডান্ডা মেরে কন্ঠ আমার রুখতে চাস বাপুরে
ফুসে যখন উঠবো, তখন পারবেনা রুখতে সাপুড়ে।
কবির প্রেম
আব্দুল্লাহ যুবায়ের
প্রিয়ঃ কবি এতো প্রেম তুমি কোথায় পেল?
কবিঃ ওগো এতো প্রেম নয় রানী, এ ছলনা।
প্রিয়াঃ ছলনা! কার সাথে? কেনইবা এই ছলনা?
কবিঃ কবির অতৃপ্ত আত্মায় এহলো সাগরের উচ্ছাস
সাহিত্যের বেলাভূমিতে এহলো ছন্দের দোলা
হাজার শব্দের দোলাচালে ছলনা করে কবি
মেটায় মনরে ক্ষুধা, যা পাঠকের প্রেম সুধা।
প্রিয়াঃ কাজ নেই আর তোমার কবিতা লিখে
এর চেয়ে বরং গদ্যই ঢের ভালো।
কবিতা
থমকে যাই
আব্দুল্লাহ যুবায়ের
আপনি পৃথিবীর সর্বোচ্চ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন
বাংলাকে নিয়ে গেছেন বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে
আপনার পূর্বসূরি অমর্ত সেন ও রবীন্দ নাথ ঠাকুর
যেমন জাতি হিসাবে আমাদের গর্বিত করেছিলেন।
তাদের চেয়েও আরো নিকটে আপনার অবস্থান
আপনি অর্থনীতি শেখান দেশের সর্বোচ্চ বিদ্দাপিঠে
আমরা উচ্চ কণ্ঠে আপনার নাম উচ্চারণ করতে চাই।
হঠাৎ থমকে যাই --
সুদখোর দুর্জনেরা যখন দড়জায় কড়া নাড়ায়।
আপনি বলেছিলেন ঋণ পাওয়া সবার অধিকার
আমার ক্ষুদ্র মাথা সমোতা বোঝে না, বোঝে
ঋণের সিংহভাগ পরিশোধ করতে হয় আমাকেই
তবুও কোন পুরুষের ঋণ পাবার অধিকার নেই।
ঘরের টিন গেলো, মুরগি গেল, ভাঙলো সংসার
হায় শুধু সংসাজাই আমার হল সার।
আমার নেওয়ার দিতে হল! একেমন অত্যাচার?
বাজারে যতই লাগুক আগুন শেষ হয় না সুদের ফাগুন
সিডর যতই হানুক আঘাত বন্ধ হয় না কিস্তির খাত।
ক্ষমা করবেন আপনি পৃথিবীর তালিকা ভূক্ত, আমি নগন্য
আমার চিৎকারে কারো ঘুম ভাঙে না, সারা দেয় না
আল্লাহ-ঈশ্বর-জিউস কিংবা শিব
নিজেই বলুন তবুও কি আপনি গর্বিত একজন?